লিওনার্দো দা ভিঞ্চি (এপ্রিল ১৫, ১৪৫২ - মে ২, ১৫১৯) ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী। অবশ্য বহুমুখী প্রতিভাধর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির অন্যান্য পরিচয়ও সুবিদিত- ভাস্কর, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রশিল্পী এবং বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনক। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জন্ম ফ্লোরেন্সের অদূরবতী ভিঞ্চি নগরের এক গ্রামে, ১৪৫২ সালের ১৫শে এপ্রিল। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার অন্যতম। তাঁর শৈল্পিক মেধার বিকাশ ঘটে খুব অল্প বয়সেই। আনুমানিক ১৪৬৯ সালে রেনেসাঁসের অপর বিশিষ্ট শিল্পী ও ভাস্কর আন্দ্রেয়া ভেরোচ্চিয়োর কাছে ছবি আঁকায় ভিঞ্চির শিক্ষানবিশ জীবনের সূচনা। এই শিক্ষাগুরুর অধীনেই তিনি ১৪৭৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষত চিত্রাঙ্কনে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। ১৪৭২ সালে তিনি চিত্রশিল্পীদের গিল্ডে ভর্তি হন এবং এই সময় থেকেই তাঁর চিত্রকর জীবনের সূচনা হয়।
লিওনার্দোর আঁকা মোনালিসা।
১৪৭৮ সাল থেকে ১৫১৬-১৭ ও ১৫১৯ সাল অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রসারিত এবং বিভিন্ন পর্বে বিভক্ত, এক দীর্ঘ ও অক্লান্ত কর্ম সাধনার জীবন তাঁর। গির্জা ও রাজপ্রাসাদের দেয়ালে চিত্রাঙ্কন এবং রাজকীয় ব্যক্তিবর্গের ভাস্কর্য নির্মাণের পাশাপাশি বেসামরিক এবং সামরিক প্রকৌশলী হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জ্ঞানের প্রয়োগ, অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা, জীববিদ্যা, গণিত ও পদার্থবিদ্যার মতো বিচিত্র সব বিষয়ের ক্ষেত্রে তিনি গভীর অনুসন্ধিৎসা প্রদর্শন করেন এবং মৌলিক উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দেন।
আনুমানিক ১৪৮২ সালে তিনি মিলান গমন করেন এবং সেখানে অবস্থানকালে তাঁর বিখ্যাত দেয়াল চিত্র দ্য লাস্ট সাপার অঙ্কন করেন। আনুমানিক ১৫০০ সালে তিনি ফ্লোরেন্স ফিরে আসেন এবং সামরিক বিভাগে প্রকৌশলী পদে নিয়োগ লাভ করেন। এই সময়েই তিনি তাঁর বিশ্বখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা অঙ্কন করেন। জীবনের শেষকাল তিনি ফ্রান্সে কাটান।
অনেক ঐতিহাসিক ও পণ্ডিত লিওনার্দোকে "ইউনিভার্সাল প্রতিভা" বা "রেনেসাঁ মানব" আখ্যা দিয়েছেন।